ভারতে সমলিঙ্গ সম্পর্কের সাথে সম্পর্কের অধিকারকে স্বীকৃতি দিলেও সরকারি আদালত সমকামী বিয়ের বৈধতা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি, এটি জানানো হয়েছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে। এক মামলার রায়ে বলা হয়েছে, সমকামী বিয়ের বৈধতা নিতে পারে না, এ ধরণের সিদ্ধান্ত নিতে হলে আইনসভাই এটি প্রতিষ্ঠান করতে হবে।
ভারতের প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড় নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারকের সাংবিধানিক বেঞ্চ মঙ্গলবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। তারা মন্তব্য করেন, একজন ব্যক্তির জুটি বাঁধার অধিকারকে কেবল তার লিঙ্গ পরিচয়ের ভিত্তিতে সীমাবদ্ধ করা উচিত নয়। এছাড়াও, বিবাহ নামের প্রতিষ্ঠান অবৈধ নয় এবং বিয়ের ধারণা বদলে যাওয়া সাধারিত। বিচারপতি এ ধরনের সিদ্ধান্তের জন্য আইনসভাই দায়িত্বশীল।
সমকামী সম্প্রদায়ের জনগণ বলছে, তাদের বিয়ের স্বীকৃতি না দেওয়ার বিষয়টি তাদের ‘দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক’ হিসেবে দেখা হয়েছে, এবং এটি একটি ‘শহুরে অভিজাত দৃষ্টিভঙ্গি’।
এই মামলার রায়ে হতাশ হয়েছে ভারতের এক কোটি ‘এলজিবিটিকিউপ্লাস’ জনগোষ্ঠির। সরকারের প্রস্তাবে সায় দিয়ে আদালত একটি কমিটি করতে বলেছে, যে কমিটি সমলিঙ্গের জুটিদের সামাজিক এবং আইনি বিভিন্ন অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করবে।
সমলিঙ্গের বিয়ের বৈধতা নিয়ে ভারতে বিশেষ বিয়ে আইনে সংশযমূলক আলোচনা হয়েছে। সরকারি আদালত বলছে, বিচারবিভাগ কেবল আইনের প্রয়োগে জোর দিতে পারে, আইন তৈরি করে সমকামীদের বিয়ের বৈধতা দিতে পারে না। এ কারণে সরকার একটি কমিটি গঠন করতে বলেছে, যা সমলিঙ্গের জুটিদের অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করবে।
সমকামীদের বিরোধে সরকার এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অভিযোগে জনগণের একটি অংশ থাকে। তাদের মতে, সমকামীদের বিয়ের বৈধতা দেওয়া হলে তা ভারতীয় সংস্কৃতির বিরুদ্ধে হবে। এর জন্যে তারা তীব্রভাবে বিরোধ করছে।
সমকামী ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলি আদালতে বলেছে, সমকামীদের আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করে আসছে। তাদের মন্তব্য, এই বিয়ের বৈধতা দিলে তা ভারতীয় সংস্কৃতির বিরুদ্ধে হবে।
সরকার থেকে সমকামী বিয়ের বিরোধিতায় আদালতে বলা হয়, এটি একটি ‘শহুরে অভিজাত দৃষ্টিভঙ্গি’। স্বামী-স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভারতীয় পরিবারের একক ধারণার সঙ্গে সমলিঙ্গের বিয়ের ধারণা মেলে না। এ সংবাদ বিশ্লেষণে এ বিষয়ে বিতর্ক ও আলোচনার জন্য পার্লামেন্ট ও আইনসভাই সঠিক জায়গা।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে ভারতে একটি পুরনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হতাশ হয়েছে এক কোটি এলজিবিটিকিউপ্লাস জনগোষ্ঠির। সমকামী যৌনতা বৈধ ঘোষণা করার জন্য তারা আবেদন করেছিলেন, কিন্তু এই রায় দ্বারা তাদের আশা হারিয়ে যাওয়ায় তারা অসন্তুষ্ট।
সাথে একই সালে, সমকামী যৌনতাকে বৈধতা দেয় আদালত। এটি বাংলাদেশ ছাড়া এশিয়ায় সমকামী সম্পর্ক সমর্থন করা দেওয়া হয়েছে কেবল তাইওয়ান ও নেপালে।
ভারতীয় সংবিধানের ২১ ধারা অনুযায়ী এলজিবিটিকিউপ্লাস (নারী ও পুরুষ সমকামী, উভকামী, রূপান্তরকামী, কিম্ভুত ও অন্যান্য) ব্যক্তিদের সঙ্গী পছন্দের অধিকার রয়েছে। এছাড়াও, ১৯৫৪ সালে হওয়া স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট বা বিশেষ বিয়ে আইনে কেবল বিভিন্ন বর্ণ ও ধর্মের লোকদের মধ্যে বিবাহের অনুমতি দিয়েছে।
বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাট রায় এই সংস্কৃতি ও ধর্ম দ্বন্দ্বের মধ্যে সমকামী যৌনতা বৈধ ঘোষণা করার জন্য অনুমতি দেওয়ার মাধ্যমে নিজেদের আপনাপনি ধরনে বাধা দেতে চান। এছাড়াও, বিয়ে আইনের বিষয়ে তিনি একমত নয়, তার মন্তব্য অনুযায়ী আইনসভাই এ সংবাদ বিতর্কে অবশ্য অংশ নেবে।
এই সার্বজনীন আলোচনায় আসা যাচ্ছে যে, এই রায় দ্বারা সুপ্রিম কোর্ট সমলিঙ্গ সম্পর্কের বৈধতা দেওয়া হয়নি, বরং এটি সমকামী সম্পর্কে সোনালী সমর্থন প্রদান করেনি। এ বিষয়ে দেশে একে অপরের মতামত অভিজ্ঞান হয়নি।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সাথে একটি মুখোমুখি ভাষা হয়নি এই বিষয়ে, তবে বিচারপতি চন্দ্রচূড় নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের মধ্যে তিনি নিজের মতামত প্রদান করেনি, তাদের রায় তৈরির জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে।
বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের সঙ্গে এই কমিটির অবস্থান হবে বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট্ট, বিচারপতি হিমা কোহলি, বিচারপতি কিরণ রজির এবং বিচারপতি এস নরসিংহের সঙ্গে। এছাড়াও, একটি স্থানীয় সংগঠনের প্রতিষ্ঠান একজন সদস্যও থাকবে এই কমিটিতে।
এই বিষয়ে কমিটির সভা তারিখ এখনো নির্ধারণ হয়নি, কিন্তু এটি বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের আদেশের ভিত্তিতে হতে হবে।
বিচারপতি চন্দ্রচূড় একটি সমলিঙ্গ বিয়ের বৈধতা স্বীকৃতি দেয়ার জন্য অপেক্ষা করেননি, তিনি মঙ্গলবার একটি পাঁচজন বিচারকের সাংবিধানিক বেঞ্চ দিয়ে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
You may also like
-
বাংলাদেশের সমুদ্র-ভূমি তেল সংরক্ষণ ও পরিবহন সিস্টেমের বাণিজ্যিক অপারেশন শুরু
-
বাংলাদেশের বনভূমি দ্রুত ক্ষয়িষ্ণু হওয়ায় সরকার জাতীয় বন তালিকা প্রণয়ন শুরু করেছে
-
ওবায়দুল কাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুর গেলেন
-
মহাখালী থেকে ‘সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে আটক ২৫
-
সরকার বিএনপির সমাবেশে বাধা দেয়নি, বরং সহযোগিতা দিচ্ছে: ওবায়দুল কাদের